
সিলেটে পুলিশের পোশাক পরা ‘রহস্যময়’ এক ব্যক্তিকে হাতের নাগালে পেয়েও ছেড়ে দিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশ।
শনিবার (৮ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে মহানগরীর কিন ব্রিজের দক্ষিণ মুখে এ ঘটনা ঘটে। ভুয়া পুলিশকে ধরে ওই ট্রাফিক পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছিলেন জিল্লুর রহমান জিতু নামের সিলেটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা । পরে এ ঘটনা নিজের ফেসবুক ওয়ালে ছবিসহ তুলে ধরেন তিনি । তবে পুলিশ এ বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব-মিডিয়া) সুদ্বীপ দাস।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিলেটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিল্লুর রহমান জিতুর ‘ভুয়া পুলিশ আটক’ বিষয়ক একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন। জিল্লুর রহমান জিতুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তিনি মোটরসাইকেল যোগে জরুরি প্রয়োজনে উত্তর সুরমা থেকে কিন ব্রিজ হয়ে দক্ষিণ সুরমায় যাচ্ছিলেন। ব্রিজের মধ্যখানে পুলিশের পোশাক পরা একব্যক্তি তাকে হাত নেড়ে থামান এবং তার গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। এসময় জিতু ওই ব্যক্তিকে বলেন ‘এখানে দাঁড়ালে তো অন্যান্য গাড়ির চলাচল বিঘ্নিত হবে। আসুন ব্রিজের নিচে গিয়ে কাগজ দেখাই।’
পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তিকে জিতু তার পেছনে মোটরসাইকেলে বসিয়ে ব্রিজ থেকে নামতে থাকেন। কিন্তু পোশাকের নেম প্লেটের জায়গা কোনো নাম না থাকায় এবং নামার সময় কথা বলার এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তির প্রতি জিতুর সন্দেহ হয় এবং ব্রিজ থেকে নেমেই সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে ওই ব্যক্তিকে চেনেন কি না জিজ্ঞেস করেন। তখন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তিকে চিনেন না এবং কোনোদিন দেখেননি বলে জানান।
জিতুর সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় এবং পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তিকে ঝাপটে ধরেন। এসময় সেখানে অনেক উৎসুক জনতা জড়ো হয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত সেই ট্রাফিক পুলিশও ছিলেন। পরে জিতু ওই ব্যক্তির শরীর থেকে পুলিশের পোশাক টেনে খুলে সেটি ট্রাফিক পুলিশের হাতে দেন এবং ওই প্রতারককে ট্রাফিক পুলিশের জিম্মায় দিয়ে তিনি তার গন্তব্যের দিকে চলে যান।
সাবেক ছাত্রলীগনেতা প্রতিবেদককে বলেন ‘আমার জরুরি প্রয়োজন ছিলো। তাই ওই প্রতারককে ট্রাফিক পুলিশের কাছে রেখে যাই। যদি জরুরি কাজ না থাকতো তবে আমি নিজে থানা পুলিশের হাতে তাকে তুলে দিতাম।’
কিন ব্রিজের দক্ষিণ মুখে ওই সময় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের নাম জানেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে জিতু বলেন ‘না, ওই ট্রাফিক পুলিশের নেম প্লেটের দিকে আমি খেয়াল করিনি। তাই নামও বলতে পারছি না। এখন বুঝতে পারছি আমি নিজেই থানা পুলিশের হাতে ওই প্রতাকরকে তুলে দেওয়া প্রয়োজন ছিলো।’
জিতু আরও জানান পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি শুধু তার মোটরসাইকেলই থামাননি, এভাবে অনেকের গাড়ি থামিয়েছেন।
এ বিষয়ে এসএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদ্বীপ দাস বলেন বিষয়টি আমাদের জানা ছিলো না। খোঁজ নিচ্ছি৷ উল্লেখ্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিল্লুর রহমান জিতুর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
‘‘উক্ত লোকটি পুলিশের ড্রেস পেল কোথায় ???
ভুয়া পুলিশ সদস্যকে ধরিয়ে দিলাম দক্ষিণ সুরমা পুরাতন ব্রিজের সামনে ডিউটিরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের হাতে আজ সকাল আনুমানিক ৯ ঘটিকার সময়।
উক্ত সদস্যকে আমার চোখে পড়লে এবং উনাকে সন্দেহ হলে আমি কথাবার্তা বলি এক পর্যায়ে উনার কথাবার্তায় ব্যতিক্রম দেখা দিলে আমি উনাকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করি এবং পাশে ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যকে ডেকে আনলে পুলিশ সদস্য উনাকে চিনতে পারেন না বললে আমি উনার শরীর হতে পুলিশের কাপড় জোর করে খুলি এবং কাপড়সহ ওনাকে বুঝিয়ে দেই পুলিশ সদস্যের হাতে।’’