বাড়িরংপুর বিভাগরংপুর জেলাবদরগঞ্জে ধর্ষণ মামলা তুলে না, নেওয়ায় বাদীর বাড়ীতে আগুন দিল আসামি পক্ষ

বদরগঞ্জে ধর্ষণ মামলা তুলে না, নেওয়ায় বাদীর বাড়ীতে আগুন দিল আসামি পক্ষ

মোঃ ইনামুল হক, বদরগঞ্জ, (রংপুর)শিক্ষানবিশ প্রতিনিধিঃ

রংপুরের বদরগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ধর্ষিত অতঃপর ৭মাসের অন্তঃস্বত্তার ঘটনায় সাদেকুল ইসলাম নামে একজন লম্পটের বিরুদ্ধে ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এদিকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদী পরিবারকে নানা রকম হুমকী দিয়েও কাজ না হওয়ায় অবশেষে প্রভাবশালী আসামী পক্ষ আগুন লাগিয়ে দিয়ে বাদীর বাড়িঘর পুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের পুর্ব মন্ডলপাড়া খোড়াজান গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে স্থানীয় দামোদরপুর পোদ্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্রী। গত ৭ মাস পুর্বে একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে সাদেকুল ইসলাম (৩৭) ওই মেয়েটিকে একাধিকবার অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে। ফলে মেয়েটি অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৭মাস পর এই বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামবাসী ধর্ষকের শাস্তির দাবীতে স্বোচ্চার হয়ে ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে বদরগঞ্জ থানার ওসি ধর্ষণ মামলা নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু থানায় মামলা দায়েরের ২৮দিন পরও পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারায় আসামী পক্ষের লোকজন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সেইসাথে তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদী পরিবারের সদস্যদের নানা রকম হুমকী দেয়।

অপরদিকে গত বুধবার (৮জানুয়ারি) দুপুরে আসামীর বড় শ্যালক মাসুদ রানা বাদীর বাড়িতে এসে মেয়েটির কাছে সাদা স্ট্যাম্পে জোরপুর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়েটি স্বাক্ষর না দেওয়ায় মাসুদ রানা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর সে তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে গভীর রাতে বাদীর ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে গ্রামবাসী সকলে মিলে অনেক চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার বদরগঞ্জ থানার ওসি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে ধর্ষিতার মাতা ও মামলার বাদী নাজমা বেগম জানান, সাদেকুলের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে তারা আমাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের অব্যাহত হুমকীর মুখে আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে ৫দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন (বুধবার) রাতে আমার স্বামী বাড়িতে ছিলনা এই সুযোগে আসামী সাদেকুলের বাবা আব্দুল মান্নান, স্থানীয় মেনাজুল ইসলাম মেম্বার ও সেরাজুল মেম্বারের নির্দেশে মাসুদ রানা আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মেয়েটির বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আব্দুল মান্নান, মাসুদ রানা, মেনাজুল মেম্বার, সেরাজুল মেম্বার, মালেক মিয়া, আক্তারুল ইসলাম, আনছার আলী, জয় বাবু, মোছাদ্দেক হোসেন ও হাবিবা খাতুনকে অভিযুক্ত করে করে বদরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

বদরগঞ্জ থানার ওসি এ.কে.এম আতিকুর রহমান দৈনিক প্রথম বাংলার  প্রতিনিধিকে বলেন, ঘটনাটি শোনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সুষ্ঠ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ধর্ষক সাদেকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের করতে জোর তৎপরতা চলছে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments