
অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ জাতীয় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি আ. ন. ম. খলিলুর রহমান ইব্রাহিম বলেছেন, বিএনপি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। দীর্ঘ ১৭ বছর বিএনপি জনগনের ভোটের জন্য আন্দোলন করেছে। ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না। বিএনপি জনগনের সেবা করার জন্যা রাজনীতি করে। ভিপি ইব্রাহিমের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার গ্রহন করেছেন আমাদের স্টাফ রিপোর্টার অরবিন্দ রায়।
আ. ন. ম.খলিলুর রহমান ইব্রাহিম
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার কুন্দাঘাটা গ্রামে ১৯৬৬ সালের ৯ জনু এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবার নাম মৃত আব্দুল জব্বার, মায়ের নাম হেলেনা বেগম। ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড় সন্তান।
কিশোর কাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে সাথে যুক্ত আছেন। তিনি মনে প্রাণে জিয়ার আর্দশে বিশ্বাসী। আ. ন. ম. খলিলুর রহমান ইব্রাহিম অস্প্রদায়িক চেতনা বিশ্বাস করে। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন কন্যা সন্তানের জনক। আ. ন. ম. খলিলুর রহমান ইব্রাহিম ভিপি ইব্রাহিম নামেই পরিচিত।
প্র. বাঃ রাজনীতি জীবনে আপনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত আসা কি ভাবে।
ইব্রাহিমঃ আমার রাজনীতিতে আসা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে একজন বলিষ্ঠ শ্রমিকের মত কোদাল দেখে। জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে যোগদান করি। ১৯৭৯ সালে বড়ইবাড়ি এ.কে ইন্সটিটিউটশন শাখার ছাত্রদলের ০১নং যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে রাজনীতিতে কাজ করা শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করি। ১৯৮৭সালে কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। ১৯৮৯ সালে কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। ১৯৯০ সালে ২০ জানুয়ারি কালিয়াকৈর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রসংসদের ভিপি হিসেবে বিজয় লাভ করে কলেজের উন্নয়নে কাজ করি ১৯৯৩ সালে কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি । ১৯৯৭ সালে বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হই। ২০০৯ সালে কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। ২০১১ সালে গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও বোয়ালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। ২০১৯ সালে কৃষকদলের কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হই। ২০২১ সালে কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করছি । এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।
প্র. বাঃ আপনি রাজনৈতিক জীবনের জনগণের জন্য কি কি কাজ করেছেন।
ইব্রাহিমঃ আমি বোয়ালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর ইউনিয়নের জনগনের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে গরীব – দুঃখী মানুষের জন্য বিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ইত্যাদি দিয়ে সহায়তা করেছি। এছাড়াও এলাকার রাস্তা-ঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মাণ করেছি। এদের মধ্যে বোয়ালি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন কমপ্লেক্স, বড়ইবাড়ী- রঘুনাথপুর সংযোগ রাস্তায় নড়া খালের উপর রাস্তাসহ ব্রীজ নির্মাণ (এখনো নির্মাণাধীন), নলুয়া-গাছবাড়ি সংযোগ রাস্তায় গোয়ালিয়া নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ। ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত সকল মাদরাসা-মসজিদ-মন্দিরের নির্মাণ কাজে আমি ব্যক্তিগত ভাবেও সহযোগিতা করেছি।
প্র. বাঃ বর্তমানে আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মতামত কি?
ইব্রাহিমঃ বর্তমানে আইনশৃংলা পরিস্থিতি খুব ভালো বলা যাবে না। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপির নেতাকর্মীদের কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মী যদি চাঁদাবাজির সহ অন্যান্য অপরধমলূক কাজে জড়িত থাকলে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবার নির্দেশ দিয়েছেন। কোন নেতা যদি চাঁদাবাজি সাথে জড়িতদের তদবির করেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
প্রঃবাঃ আগে সংস্কার পরে নির্বাচন আপনি কি মনে করেন।
ইব্রাহিমঃ একটি মহল সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি সাংঘর্ষিক অবস্থা নেবার চেষ্টা করছে। অন্তবর্তী সরকার যদি নিরপেক্ষতা হারায় তবে দেশের মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা হারাবে।
প্রঃ বাঃ একটি মহল বলছেন আগে শেখ হাসিনার বিচার পরে নির্বাচন আপনি কি মনে করেন।
ইব্রাহিমঃ নির্বাচনের সাথে বিচারের কোন সম্পর্ক নেই। বিচারিক প্রক্রিয়া তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এ সব কথা বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাই।
প্রঃ বাঃ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে আপনার চিন্তা ভাবনা কি?
গাজীপুর ১ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। গাজীপুর ১ আসনের জনগনের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় আমি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করব।
প্রঃ বাঃ আপনারা এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ কেমন।
ইব্রাহিমঃ আমার শিকড় গ্রামে। ব্যবসা কিংবা সন্তানের পড়ালেখার জন্য
ঢাকায় থাকলেও যে কোন প্রয়োজনে এলাকায় চলে যাই। এলাকার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করি। প্রতি বছর এলাকার মানুষের সাথে ঈদ উদযাপন করি। গরীব মানুষকে আমার সামার্থ্য মত সব সময় সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
প্রঃ বাঃ বিএনপি ছেড়ে অন্য দলের যাবার কোন চিন্তা ভাবনা কখনো করেছে।
ইব্রাহিমঃ আমি জিয়ার আর্দশের সৈনিক। যত দিন রাজনীতি করব বিএনপির সাথে থেকে মানুষের জন্য কাজ করে যাব।
প্রঃ বাঃ আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
ইব্রাহিমঃ আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমার এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা। আমি সব সময় জনগণের পাশে আছি এবং ভবিষ্যৎতে থাকব। যেকোনো পরিস্থিতিতেই এলাকার মানুষের সাথে মিলেমিশে কাজ করতে চাই। মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুগোপযোগী উন্নয়ন করা।