বাড়িঢাকা বিভাগগোপালগঞ্জ জেলামা-ও নাই বাবা থেকেও নাই , আমরা এখন কি করে বাঁচবো 

মা-ও নাই বাবা থেকেও নাই , আমরা এখন কি করে বাঁচবো 

হোসেন আলী , কোটালীপাড়া(গোপালগঞ্জ)প্রতিনিধি-

” মা-ও নাই , বাবা থেকেও নাই

আমরা এখন কি করে বাঁচবো  ”

ছোট জমজ দুই বোনকে কোলে নিয়ে ভাই সাজ্জাদ (১৩) ও বোন আফসানা খানম  (৭) কান্না জড়িত কন্ঠে  এ কথাগুলোই  বলছিলো কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চিত্রা পাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার শিশু সন্তান সাজ্জাদ হোসেন। গত  ০৬/১০/২৪ ইং তারিখ  জমজ দুই মেয়েকে জন্ম দিতে গিয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে ৬ দিন পরে মারা গেলেন , আর গত ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে । এমতাবস্থায় চারটি শিশু সন্তানের জীবনে নেমে এসেছে অমানিশার ঘর অন্ধকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক মাস আগে দুই যমজ সন্তানকে জন্ম দিয়ে অত্যন্ত অসুস্থতার কারণে ৬ দিন পরে মারা যায় দিনমজুর জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম। অপরদিকে একমাস পরে গত সাত নভেম্বর ২০২৪ রাতে জামাল মিয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় কোটালীপাড়া থানা পুলিশ।

ঘরে অসুস্থ মা ও চার শিশু সন্তানকে একাই সামলাতে দিনমজুর জামাল মিয়া ।

গত শুক্রবার রাতে জামাল মিয়াকে ধরে নিয়ে যায়  পুলিশ।

শনিবার স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয়  কমিটির দপ্তর সম্পাদক আলি হোসেন দিদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় ।

এ মামল জামাল মিয়া এখন কারাগারে রয়েছে । গত ১৩ সেপ্টেম্বর দিদার স্বেচ্ছাসেবক দলের টুংগীপাড়া মিটিং শেষে ফেরার পথে হত্যার শিকার হন। জামাল মিয়ার বড় ভাই মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বিগত সময় আমতলী ইউনিয়ন   যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলো।বর্তমানে সে কোন দল করে না।

পুলিশ কি কারনে আমার ভাইকে গ্রেফতার করলো তাহা আমাদের জানা নাই। আমার ভাই দুটি এক মাস বয়সী যমজ কন্যা  সন্তান সহ স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে চার সন্তানকে একাই দেখাশোনা করতে । ঘরে আমাদের বৃদ্ধ অসুস্থ মা রয়েছে, তাকেও  আমাদের দেখাশোনা করতে হয়।

জামাল বিহার বড় ভাই আওয়াল মিয়া বলেন, আমার ভাইকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে এখন তার চারটি শিশু সন্তান মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই গ্রেফতার আমি মনে করি অমানবিক। আমরা দ্রুততার সাথে তার মুক্তির দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।

জামাল মিয়ার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া সাজ্জাদ হোসেন বলে,আমরা চার ভাই বোন অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি, আমার বোনদের দুধ কেনার টাকা নাই, আমাদের খাবারের কোন ব্যবস্থা নাই। কয়েকদিন পরে আমার বার্ষিক পরীক্ষা, পরীক্ষার ফি কি করে দেব। পরীক্ষার ফি দিতে না পারলে আমি পরীক্ষা দিতে পারবো না, আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

তাই দয়া কইরা আপনারা আমার আব্বুরে আইনা দেন। তা না হলে আমরা এখন কি করে বাঁচবো।

এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন জেনেছি জামাল মিয়া ঢাকা তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন । এজন্য তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তাই বর্তমান সময়ে উপরের নির্দেশে আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। আমাদের কাছে তার গার্ডিয়ান পক্ষ যোগাযোগ করলে,চারটি শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে  কিছুটা মানবিক দিক বিবেচনা করার চেষ্টা করব ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments